রবিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৫

নীলবাতি

|| নীলবাতি ||

নিশীথে ভ্রামণিক নীলবাতি ছুটে যায়
সাইরেন বাজিয়ে, দিশাহীন ব্যস্ততায়
ঘুমঘোরে নড়বড়ে ফুটপাথে ভিখারি
সামলে ভিক্ষার বাটি, গোঁজে মশারি
ঝিমনো কুকুরগুলো চমকে তাকায়
ভাঙ্গে কুণ্ডলী, তোলে অনাগ্রহী কায়
পুত্রেরা হেঁটে যায় নিঃশব্দ মিছিলে
খালি পা তাদের ঘষটে পথের ধুলে
তবুও ঝরা পাতা ঝাঁট দিয়ে হাওয়া
গলিতে গলিতে তার আঁচল বিছায়

জানালায় দেখা দেয় চাঁদ ত্রয়োদশী
দেখি না মুখে তার আমার ষোড়শী
বিচল আঁখি দিদি, যার অবিচল হাসি
বুঝিয়েছিল আমরা মিছেই ভালবাসি
তার সব ভাই, আমার সৌম্য বন্ধুরা
আমারই মত, বুকের ভালবাসা হারা
ফিরে আসে না, কবেই নিয়েছে বিদায়
আমি একাকী স্মৃতিচারণের আড্ডায়
হয়তো করেছে তারা বার্ধক্য স্বীকার
ভুলে পাণ্ডবেয় এক যৌবন অঙ্গীকার

ফিরে আসে নীলবাতি নিশ্চুপ গতিতে
জেগে উঠে, যে ছিল বিলীন অতীতে
সহধর্মিণী ছড়িয়ে বিছায় গায়ের চাদর
শীতল শরীরে উষ্ণ উপেক্ষিত আদর
তার কাঁকনের রিমঝিমে, শীর্ণ মণিবন্ধে
অবশ শাড়ির খসখসে, চুলের সুগন্ধে
মাতোয়ারা হয় না আর ঘুম ঘুম চেতন
চোখ বুজি, কান পাতি,  সুতীক্ষ্ণ শ্রবণ
নীলবাতি নিঃশব্দে দাঁড়ায় দোরগোড়ায়

জানি হয়েছে সময়, এসেছে উঠে পড়ার
শমন, শেষবার নিদ্রায় তলিয়ে পালাবার
তবুও হয় না সাহস, পার হতে পারাবার
তার অঙ্ক থেকে উঠে পালঙ্কে শোবার ||


---------------------------------------
© ইন্দ্রনীর / ১৮ জানুয়ারি ২০১৫

কোন মন্তব্য নেই: