শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৫

রূপাখ্যানপুরের কথা

|| রূপাখ্যানপুরের কথা ||

চলো নিয়ে যাই তোমাকে রূপাখ্যানপুরে
বায়বীয় ময়ূরকণ্ঠী এক মহাকাশের তীরে
যেখানে লোকে
আজীবন জনশ্রুতি শোনে
তারই কথা বলবো এখন, শোন একমনে

সেই পৃথিবী নীহারিকার সপ্তসাগর পারে
লোহিতাভ সৌরমণ্ডলে ঘুরপাক খেয়ে মরে
সাঁঝ আকাশে বিধুর তার নারঙ্গি গোধূলি
স্বপ্নিল আবেশে বিবাগী করে পুরুষালি

আবিল আশে বিমোহিত পুরুষমানুষ ধায়
জমায়েত হতে জলসাঘরে, টলমল পায়

মন্থর যাম নিশ্চল হয় নিশিডাকের প্রহরে
ঝাড়বাতি জ্বালে অগুনতি জোনাকির ঝড়ে

জ্বলে নেভে মৌচাকময় কাঁচসবুজ আলো
ঐ মায়াবী আলেয়ায় কামনা ঘনায় কালো
কথা হয় শুরু - কেউ বলে, শোনে অন্যে
দূরদূরান্তে কে দেখেছে কত সুন্দরী কন্যে

কী আশ্চর্যে যে লাগে শিহরণ, জাগে বিস্ময়
‘জ্ঞাত চরাচরে সুন্দরী সত্যি এমনতরও হয়
সত্যিই পাওয়া যায় এমন পরী ডানাকাটা ?’
স্বগৃহে তো দেখেছে তারা বউই সাদামাটা

পেঁচিয়ে বেণী সেই
গৃহিণীরা পেলব অঙ্গুষ্ঠে
বাঁধে চুল, কুমকুম বরণ তাম্বূল-রাঙা ওষ্ঠে
আঁচলের পরিপাটি ভাঁজে ঢাকে উৎসুক বুক
নিরুদ্ধ হৃদয়ে লুকিয়ে প্রথম বর্ষার ডাহুক

সবুর করে মিলনের, যা হবে রাত্রির গভীরে
শীতল বিছানায় দিশাহারা উত্তাপের সঞ্চারে
অবশ্যই আরম্ভ প্রশ্নে, “সে কত সুন্দরী ?”
চিরন্তন যে দ্বন্দ্বে যুঝেছে প্রেমাতুরা নারী

ফিরে, শয্যায় কাপুরুষ মুখ লুকায় আঁচলে
উদ্যত চিবুক গ্রীবার তলে, সুরভিত কমলে
মুমূর্ষু হয়ে অনির্বাণ কামনায়
কেঁপে কেঁপে
খোঁজে উপশম জুড়ানো শরীরের সংলাপে

বোঝায়, ‘ছি! সুন্দরী সে, প্রেয়সী তো তুমি !’
লালা সিক্ত ঠোঁটে চষে নাভিমূল মালভূমি
ক্রমশ রুক্ষ বাঁধন খসে, নম্র হয় আলিঙ্গন
কোমরের জোয়ারে দোঁহে দেহ করে আচমন

ঘনিষ্ঠ হয় আলাপন, মায়াবী রাত্রিও ঘনায়

সুন্দরী
র স্বপ্ন পুরুষের মানসে উপে মিলায়
স্বপ্নে যায় মিলেমিশে বিদেশিনী কি গৃহিণী
ঊষায়, বাহুতে ঘুমায় ক্লান্ত তৃপ্ত বিরহিণী ||


---------------------------------------------
© ইন্দ্রনীর / ০6 ডিসেম্বর ২০১৫

কোন মন্তব্য নেই: