শুক্রবার, ১ মে, ২০১৫

সুয়ো-দুয়ো

|| সুয়ো-দুয়ো ||

লাল টুকটুকে বউ আনতেই
মা বলল, “আয়, শুবি আয় ”
অমনি নতুন কনের উঠলো
নেকি নাকি সুরে বেদম বায় –

“আমায় যখন আনলে ধরে
ছাড়ো তখন তোমার মাকে |
নইলে দিলাম দিব্যি - ঠাকুর
করবেন না খ্যামা তোমাকে

বিয়ে না হতেই হলাম দুয়ো
যাই ফিরে তবে বাপের বাড়ি
তোমার আমার আজ থেকে
হোক জন্ম-জন্মান্তরের আড়ি”

বলে, মুখ কালো হাঁড়ি করে
বউ চলে গেল নিজের গাঁয়ে
আমি কী আর বলব রে ভাই 

কেঁদেছি আনাড়ি হবার দায়ে

বোঝাল মা, “পেটে ধরেছি,
রেখেছি আজ অব্দি কাছে
আজকে তোর বিয়ে হয়ে
সবই কি তুই করবি মিছে ?

মাদুর ছড়িয়ে, কাঁথা পেতে,
দিয়ে মাথার তলায় বালিশ
কত তোকে তেল মাখিয়ে
গাটা মলে করেছি মালিশ |

পেটের ভিতর, কোলে পিঠে
থাকিস না মেরে যতই লাথি
যতই আনিস টুকটুকে সই
আমিই যে তোর জনমসাথী”

মায়ের মুখে তাকিয়ে দেখি
বৌয়ের চেহারা মা’রই মত
দেখেই চোখ জলে ভেজে,
মায়ের পায়ে হয় মাথা নত

যাই ছুটে আমি শ্বশুর বাড়ি
বলি ধরে তার হাতে পায়ে
“বউ না সই, মায়ের মতই
থাকবে চলো আমার সায়ে”

এখন আমার সই জোড়া মা
সাদা থানে, আর লাল পাড়ে
নেই সুয়ো-দুয়োর রেষারেষি
দু’জনেই আমার মন কাড়ে ||


-----------------------------------
© ইন্দ্রনীর / ০১ মে ২০১৫


কোন মন্তব্য নেই: